তুমি আমার স্পার্ক
কে বলে তুমি নেই —
তুমি এখনও আমার ডিএনএ-র ডিজাইন কোডে জ্বলছো,
চোখের রেটিনায় খোদাই করে রয়েছ।
সব ডিসিশনের মুলে, অবচেতন মনে, ভাবনার শক্তিতে,
হ্যাঁ, তুমি ওই মানুষ—
যার হাতে সদর দরজার তালা খুলে যেত,
একটা নিছক বিকেল কে ভালোবাসায় মেখে রাখত
তুমি ওই বিশ্রামহীন হাত,
তুমি কাঁধে দায়িত্ববোঁধ,
চোখে কিছু না-বলা, হিমালয় স্নেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেয়াল।
তুমি ওই বিশ্বাস —
যে নিজের নতুন জামা ফেলে
আমার ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে বলতো, “এটাই তো আমার প্রাইজ।”
যে নিজের অবসরের মানে বুঝতো নতুন যুদ্ধ—
সোনার দোকানের কাউন্টারে তুমি সোনা বেচতে না,
তুমি বিশ্বাস আর স্বপ্ন বুনতে!
তোমার ভালোবাসা ছিল
না-বলা চা কাপের ভাঁজে,
ঘুমহীন রাতের কান্না চেপে-রাখা চোখে,
একটা ছায়া যার ছায়াও আমায় আগলে রাখে।
তুমি ছিলে শক্তির ইঞ্জিন,
বিশ্বাসের ব্যাটারি,
ভয়ডরের বিপরীতে একটা বাবা।
তোমার আদর্শ—
Netflix-er সিরিজ না,
জীবনের রাফ্টার,
যেখানে আমি পা রাখি, আর পড়ি না।
তুমি একটা রাগে নরম মানুষ,
যার হঠাৎ রেগে যাওয়া মানে ছিল—
"তুই সাবধান থাকিস, তুই ভালো থাকিস, তুই বাঁচিস!"
তুমি সেই নিঃশব্দ শক্তি,
যে বলে না, করে—
তুমি দেখালে, শব্দ নয়, উপস্থিতিই ঈশ্বর।
তুমি রুটিন নও, তুমি অধ্যবসায়ের ব্যাকরণ—
তুমি কাজ, তুমি ধৈর্য, তুমি স্বপ্নে ওঠা সিঁড়ি।
তুমি কখনও বলোনি “ভাল কর”
তবু তোমার প্রতিদিনের ক্লান্ত মুখটাই শিখিয়েছে—
"শ্রম মানে সম্মান।"
তুমি আদর্শ, তুমি আমার চরিত্রের চিত্রশালা,
তুমি আমাদের দরজায় থাকা শিক্ষকের মূর্তি।
তুমি বলোনি “ভালোবাসি”—
তুমি করেছো।
তুমি আমার রক্তে বয়ে চলা অভ্যেস,
যে আমার সন্তানকে দেখে—
আমি নিজেই তোমাকে চিনে ফেলি।
তুমি দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়—
যখন পৃথিবী কেঁপে উঠে, আমি জানি,
তুমি আছো, কারণ তুমি সাধারণত্বে অসাধারণ।
তুমি আমার “যথেষ্ট”,
আমার “চাই না আর”,
তুমি শিখিয়ে দিলে—
অল্পতেই বিশ্ব হয়।
তুমি আমার ভুল করলেও উঠিয়ে দেওয়া হাত,
তুমি কাঁধে রাখা একান্ত স্পর্শ—
যে বলে, “তুই পারবি, তুই ঠিক আছিস।”
তুমি আমার ভিতরের ন্যায়বোধ,
তুমি আমার চেতনায় থাকা ছায়া,
তুমি আমার শিকড়, আমার গাছ,
আমার কাঁটা, আমার ফুল,
তুমি গোপনে রেখে যাওয়া স্নেহ—
তুমি যাওনি।
তুমি আমার ভিতরে
বাঁচার কারণ হয়ে আছো।
তুমি আমার স্পার্ক।
Comments
Post a Comment